খিলজি রাজবংশের ভারত শাসন - ইসলামী ইতিহাস | Learn about the rule of Khalji dynasty

অল্প বয়স্ক শিহাবুদ্দীনকে অবরোধ করে ১২৯০ খ্ৰীষ্টাব্দে জালাল উদ্দীন ফিরােজ শাহ উপাধি গ্রহণ করে দিল্লীর সুলতান হিসাবে সিংহাসনে আরােহণ করেন। তিনিই খিলজি বংশের প্রতিষ্ঠাতা। সুলতান জালাল উদ্দীন ফিরােজ শাহ ক্ষমতা গ্রহণ করায় দিল্লীর সালতানাতে তুর্কি শাসনের অবসান ঘটে এবং খিলজি সম্প্রদায়ের শাসনের সূচনা হয়। সুলতান জালাল উদ্দীন ফিরােজ শাহ প্রায় ছয় বছর শাসন কার্য পরিচালনা করেন। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে অযােধ্যার শাসনকর্তা স্বীয় ভ্রাতুষ্পুত্র আলাউদ্দীনের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য দাক্ষিণাত্যের কারামানিক পুরে পৌঁছালে আলাউদ্দীনের চক্রান্তে তিনি নিহত হন। জালাল উদ্দিনকে হত্যা করার পর আলাউদ্দিন খিলজি নিজেকে দিল্লীর সুলতান হিসাবে ঘোষণা করেন।


খলজি রাজবংশের ভারত শাসন, ইতিহাস, ঐতিহ্য, অবদান, প্রতিষ্ঠাতা ও রাজ্য পরিচালনা সম্পর্কে জানুন। Learn about the rule of Khalji dynasty.


 আলাউদ্দীন খিলজি ক্ষমতায় আরােহণ করেই মােঙ্গলদের দমন ও অর্থনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি রাজ্য সম্প্রসারণের প্রতিও মনােনিবেশ করেন। তিনি তার শাসনামলে উত্তর ভারতের গুজরাটসহ অনেক এলাকা এবং দক্ষিণাত্যের দেবগিরি, বরঙ্গল, মেবারসহ অনেক অঞ্চল দিল্লি সাম্রাজ্যের আওতাভুক্ত করেন। সুলতান আলাউদ্দীন খিলজি দীর্ঘ বিশ বছর অত্যন্ত দাপটের সাথে রাজ্য পরিচালনা করে ১৩১৬ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে আলাউদ্দীনের অন্তিমকালে তার মন্ত্রী মালিক কাফুর ক্ষমতা দখলের হীন লালসায় সুলতানকে তাঁর দুই সন্তান খিজির খান ও সাহদি খানকে যড়যন্ত্রের অপরাধে কারাগারে বন্দী করতে এবং শিশু সন্তান শিহাব উদ্দীনকে উত্তরাধিকারী ঘোষণা করতে বাধ্য করেন। 

অতঃপর সুলতানের মৃত্যু হলে তার স্ত্রীকে জোর পূর্বক বিবাহ করে নিজেই শাসন কার্য চালাতে থাকেন। কিন্তু তিনি বেশি দিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারেননি। প্রাসাদের জনৈক দেহরক্ষীই তাকে হত্যা করে ফেলে। কাফুরের মৃত্যুর পর শিহাব উদ্দীনের বড় ভাই মুবারক খান তার প্রতিনিধি নিযুক্ত হন। কিন্তু কিছুদিন পর মুবারক খান তার ছােট ভাই শিহাব উদ্দীনের চোখ উপড়ে ফেলে তাকে সিংহাসনচ্যুত করে ১৩১৬ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লির সিংহাসনে আরােহণ করেন। 

মুবারক খান সিংহাসন লাভের পর আমােদ-প্রমােদে গা ভাসিয়ে দেন। এতে করে দাক্ষিণাত্যের শাসনকর্তা খসরু খান ১৩২০ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান মুবারক খানকে হত্যা করে সিংহাসন অধিকার করেন। কিন্তু খসরু খানও অল্পকালের মাঝেই ক্ষমতার অপব্যবহার করতে শুরু করেন। ফলে অভিজাত সম্প্রদায় ক্রমেই তার প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এ সুযােগে পাঞ্জাবের শাসনকর্তা | গাজী মালিক ১৩২০ খ্রিষ্টাব্দে এক বিরাট সৈন্য বাহিনী নিয়ে দিল্লী আক্রমণ করেন এবং খসরু খানের শিরােচ্ছেদ করে দিল্লির কেন্দ্রীয় ক্ষমতার অধিপতি হন।